টাইমফ্রেমের মাধ্যমে আমরা কোন নির্দিষ্ট ১ মিনিট, ৫ মিনিট, ১৫ মিনিট, ১ ঘন্টা, ৪ ঘন্টা, ১ দিন, ১ সপ্তাহ বা ১ মাসে প্রাইস সর্বোচ্চ কত বেড়েছিল বা কমেছিল ইত্যাদি আমরা জানতে পারি। যদি আমরা ১টি ৫ মিনিটের ক্যানডেল দেখি, তাহলে তা থেকে আমরা বুঝতে পারবোঃ
- কোন প্রাইসে ক্যানডেলটি শুরু হয়েছে
- কোন প্রাইসে ক্যানডেলটি ক্লোজ হয়েছে
- প্রাইস ঐ ৫ মিনিটে সর্বোচ্চ কত বেড়েছিল
- প্রাইস ঐ ৫ মিনিটে সর্বনিম্ন কত কমেছিল
সাধারনত নিম্নোক্ত টাইমফ্রেমগুলো বেশী ইউজ হয় কারন এগুলো মেটাট্রেডার ৪ এ ডিফল্টভাবে দেয়া থাকে। কিন্তু মেটাট্রেডার ৫ এ আপনি আরো কাস্টম কিছু টাইমফ্রেম ব্যবহার করতে পারবেন।
ভিন্ন ভিন্ন ট্রেডার তাদের পছন্দমত টাইমফ্রেম নির্বাচন করে তার ভিত্তিতে অ্যানালাইসিস করে এবং ট্রেড নিয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে ট্রেডের আকার এবং সময়কালও পরিবর্তিত হয়। একজন ট্রেডারের উচিত তিনি যে ধরনের ট্রেডিং করতে চান, তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ টাইমফ্রেম নির্বাচন করা। এখানে ফরেক্স ট্রেডিংয়ে বহুল ব্যবহৃত টাইমফ্রেমগুলো নিয়ে আলোচনা করা হলঃ
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে বহুল ব্যবহৃত টাইমফ্রেম সমূহ |
||
---|---|---|
টাইমফ্রেম | প্রতিটি ক্যানডেল যা নির্দেশ করে | |
M1 | M1 চার্টে প্রতিটি ক্যানডেল প্রতি ১ মিনিটের সর্বোচ্চ, সর্বনিম্ন, ওপেনিং এবং ক্লোজিং প্রাইস নির্দেশ করে | |
M5 | M5 চার্টে প্রতিটি ক্যানডেল প্রতি ৫ মিনিটের সর্বোচ্চ, সর্বনিম্ন, ওপেনিং এবং ক্লোজিং প্রাইস নির্দেশ করে | |
M15 | M15 চার্টে প্রতিটি ক্যানডেল প্রতি ১৫ মিনিটের সর্বোচ্চ, সর্বনিম্ন, ওপেনিং এবং ক্লোজিং প্রাইস নির্দেশ করে | |
M30 | M30 চার্টে প্রতিটি ক্যানডেল প্রতি ৩০ মিনিটের সর্বোচ্চ, সর্বনিম্ন, ওপেনিং এবং ক্লোজিং প্রাইস নির্দেশ করে | |
H1 | H1 চার্টে প্রতিটি ক্যানডেল প্রতি ১ ঘন্টার সর্বোচ্চ, সর্বনিম্ন, ওপেনিং এবং ক্লোজিং প্রাইস নির্দেশ করে | |
H4 | H4 চার্টে প্রতিটি ক্যানডেল প্রতি ৪ ঘন্টার সর্বোচ্চ, সর্বনিম্ন, ওপেনিং এবং ক্লোজিং প্রাইস নির্দেশ করে | |
D1 | D1 চার্টে প্রতিটি ক্যানডেল প্রতি ১ দিনের সর্বোচ্চ, সর্বনিম্ন, ওপেনিং এবং ক্লোজিং প্রাইস নির্দেশ করে | |
W1 | W1 চার্টে প্রতিটি ক্যানডেল প্রতি ১ সপ্তাহের সর্বোচ্চ, সর্বনিম্ন, ওপেনিং এবং ক্লোজিং প্রাইস নির্দেশ করে | |
MN | MN চার্টে প্রতিটি ক্যানডেল প্রতি ১ মাসের সর্বোচ্চ, সর্বনিম্ন, ওপেনিং এবং ক্লোজিং প্রাইস নির্দেশ করে |
আপনি কোন নির্দিষ্ট টাইমফ্রেমের কোন ১টি ক্যানডেল দেখলেই বুঝতে পারবেন ঐ সময়ে প্রাইসের মুভমেন্ট কেমন হয়েছিল। যেমন নিচে একটি ১ দিনের ডেইলি চার্টের স্ক্রিনশট দেয়া হয়েছে। এই চার্ট দেখে বোঝা যায় ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসের ৭ তারিখ ডেইলি ক্যানডেলটি কোন প্রাইসে শুরু (O) হয়েছিল এবং কোন প্রাইসে শেষ (C) হয়েছিল। এছাড়াও বোঝা যায় সেদিন অর্থাৎ ঐ নির্দিষ্ট ২৪ ঘন্টায় প্রাইস সর্বোচ্চ (H) কততে উঠেছিল এবং সর্বনিম্ন (L) কত প্রাইসে নেমেছিল।

কোন টাইমফ্রেমে ট্রেড করবো?
এটা নির্ভর করে আপনি কি ধরনের ট্রেড করতে চান। আপনি যদি স্ক্যাল্পিং পছন্দ করেন তবে আপনার উচিত M1, M5, M15 অথবা M30 এ ট্রেড করা। আপনি যদি সাধারন কিংবা একটু লং টার্ম ট্রেড করতে চান, তবে আপনার H1, H4 অথবা D1 এ ট্রেড করা উচিত। সুইং বা পজিশন ট্রেড করতে আগ্রহী হলে আপনার সপ্তাহ অথবা মাসের টাইমফ্রেমগুলোকে অ্যানালাইসিস করা উচিত।
ভিন্ন ব্রোকারে ক্যানডেল ভিন্ন কেন?
ট্রেডাররা একটি সমস্যায় খুব বেশি পরে থাকেন তা হল যখন তারা একাধিক ব্রোকারে ট্রেড করেন। বিভিন্ন ব্রোকার তাদের দেশের সময় অনুযায়ী ভিন্ন সময়ে তাদের সার্ভার টাইম নির্ধারণ করে থাকে। ইউরোপিয়ান ব্রোকারগুলোকে এ ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড ধরে থাকে ট্রেডাররা। রাশিয়ান, নিউজল্যান্ডের ব্রোকারগুলোর সার্ভারের সময় ইউরোপিয়ান ব্রোকারগুলো থেকে ১-২ ঘন্টা কম-বেশি হয়ে থাকে। সেই ক্ষেত্রে আপনি যখন M1, M5, M15, M30, H1 টাইমফ্রেমে ট্রেড করেন, তখন সব ব্রোকারের ক্যানডেলগুলো একই রকম থাকে। কিন্তু আপনি যখন H4, D1, W1, MN টাইমফ্রেমে ট্রেড করেবেন, তখন আপনি বিভ্রান্তির স্বীকার হতে পারেন। ধরা যাক একটি ব্রোকারের সার্ভার সময় অনুযায়ী তাদের দিন শুরু হয় বাংলাদেশ সময় রাত ৪টায়। সেই ক্ষেত্রে তাদের প্রথম ৪ ঘন্টার H4 ক্যানডেলে রাত ৪টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত যে পরিমাণ প্রাইস পরিবর্তন হয়েছে তা নির্দেশ করবে। কিন্তু আরেকটি ব্রোকারের সার্ভার সময় অনুযায়ী দেখা গেলো বাংলাদেশ সময় রাত ৩টায় তাদের দিন শুরু হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রথম ৪ ঘন্টার H4 ক্যানডেলটি রাত ৩টা থেকে সকাল ৭টার পর্যন্ত যে পরিমাণ প্রাইস পরিবর্তন হয়েছে তা নির্দেশ করবে। তাই ক্যানডেল দুটির সাইজও ভিন্ন হবে এবং ভিন্ন ডাটা দেখাবে। অনেকেই ভিন্ন ভিন্ন ব্রোকারে ভিন্ন সাইজের ক্যানডেল এবং তার ইনফরমেশন দেখে ভাবেন ব্রোকার বুঝি ভুল দেখাচ্ছে। আসলে তা নয়। H4 এবং D1 টাইমফ্রেমের ক্যানডেলগুলোতে এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে।
মন্তব্য করুন